২০২৪ সালে সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম জেনে নিন

ব্র্যাক ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়মব্যাংক খাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরেই অবস্থান সোনালী ব্যাংকের। জনসাধারণের বিশ্বাস এবং আস্থার জায়গা হল সোনালী ব্যাংক। পূর্বে সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খোলার জন্য অনেক ঝামেলা বা অনেক কঠিন কঠিন পর্যায়ে পার হওয়া লাগতো। কিন্তু বর্তমান সময়ে সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সাধারন মানুষের সুবিধার্থে সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম অনেকটা সহজ করে দিয়েছে।পূর্বের সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খোলার জন্য শাখায় গিয়ে একাউন্ট খোলা লাগতো কিন্তু বর্তমান সময় আপনি ঘরে বসে আপনার হাতের স্মার্টফোন দিয়েও খুব সহজে সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে পারবেন।

২০২৪ সালে সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম

আমি ইতিপূর্বে বলেছি যে সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খোলা অনেকটা কষ্টসাধ্য ছিল কিন্তু বর্তমান সময়ে ই সেবা চালু হওয়ার পর থেকে অনলাইনে সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খোলা খুবই সহজ। বর্তমান সময়ে মানুষের আস্থার এবং পছন্দের শীর্ষে রয়েছে সোনালী ব্যাংক এবং এই সোনালী ব্যাংকের মূল উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্য হলো জনসাধারণের সাহায্য করা এবং তাদের লেনদেনকে সহজ করে তোলা।

পোস্ট সূচিপত্রঃ ২০২৪ সালে সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম

.

ভুমিকা

বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ব্যাংক হল বাংলাদেশ ব্যাংক কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের পরে জনপ্রিয় এবং মানুষের চাহিদা হল সোনালী ব্যাংক। সোনালী ব্যাংক হল জনসাধারণের আস্থা এবং ভরসার একটি জায়গায় এখানে আপনি নিশ্চিন্তে আপনার সারা জীবনের গচ্ছিত আমানত রাখতে পারেন। সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খোলার দুই রকমের উপায় রয়েছে একটি হলো আপনার নিকটস্থ সাক্ষাতে যেয়ে অ্যাকাউন্ট খোলা এবং দ্বিতীয়টি হলো অনলাইনে সোনালী ই-সেবা অ্যাপের মাধ্যমে একাউন্ট।প্রিয় পাঠক বন্ধু আপনি যদি সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে ইচ্ছুক থাকেন খুব সহজেই এ আর্টিকেলটি পড়ে আপনি সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে পারবেন।

সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম

আপনারা অনেকেই জানতে চান যে কিভাবে আমরা সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে পারবো। এই প্রশ্নটির উত্তরের জন্য আজকের এই আর্টিকেলটি লেখা। প্রিয় পাঠক বন্ধ যেকোনো ব্যাংকে একাউন্ট খোলার জন্য অবশ্যই আপনাকে কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে যে আপনি কোন উদ্দেশ্যে একাউন্ট খুলতে চাচ্ছেন। বর্তমানে সোনালী ব্যাংকের ৩ ধরনের অ্যাকাউন্ট প্রচলিত রয়েছে কারেন্ট একাউন্ট সেভিংস একাউন্ট অনলাইন একাউন্ট।

বাংলাদেশে আর্থিক লেনদেনের জন্য জনপ্রিয় এবং দ্বিতীয় স্থানে অবস্থিত সোনালী ব্যাংক। সোনালী ব্যাংকে একাউন্টখোলার জন্য আপনি চাইলে আপনার নিকটস্থ শাখাতে গিয়েও খুলতে পারেন অথবা প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র এবং ডকুমেন্ট নিয়ে আপনার হাতের স্মার্টফোন দিয়ে অনলাইনে একাউন্ট খুলতে পারবেন।

অনলাইনে সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম

বর্তমান সময় আধুনিক প্রযুক্তির যুগ। বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল বাংলাদেশের পরিণত হয়েছে যার ফলে সাধারণ জনগণ তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় কাজগুলো স্মার্ট ডিভাইসের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করছে। এই বিষয়টিকে বিবেচনায় রেখে সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ই-সেবা অ্যাপসের মাধ্যমে সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খোলার সিস্টেম চালু করেছে। এখন অনেকেই জানে না যে অনলাইনে সোনালী ই সেবা অ্যাপস এর মাধ্যমে কিভাবে একাউন্ট খোলা যায়। তবে চিন্তার কোন কারণ নেই এখনই আমি আপনাদেরকে ধাপে ধাপে জানিয়ে দেবো যে কিভাবে আপনি ঘরে বসে অনলাইনে সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে পারবেন।

  • প্রথমে আপনি আপনার স্মার্ট ফোনে ইন্টারনেট কানেকশন অন করে গুগল প্লে স্টোর থেকে সোনালী ই-সেবা অ্যাপসটি ইন্সটল বা ডাউনলোড করে নিন।
  • অ্যাপসটির ভেতরে প্রবেশ করুন এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলুন অপশনে ক্লিক করুন।
  • এবার আপনার নামে নিবন্ধিত ১১ ডিজিটের ফোন নম্বরটি প্রদান করুন এবং otp আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। প্রাপ্ত ওটিপিটি প্রদান করে আপনার মোবাইল নাম্বারটা ভেরিফাই করে নেন।
  • মোবাইল নাম্বার ভেরিফিকেশন এর পরে ক্যামেরা অন করে আপনার ছবি তুলুন এবং আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম্বার এবং জন্ম সনদের নাম্বার লিখুন। সকল নাম্বার সঠিকভাবে লেখার পরে মোবাইলের ক্যামেরা দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের সামনের এবং পেছনের ছবি তুলুন এবং শেষে তথ্য যাচাই অপশনে ক্লিক করুন।
  • জাতীয় পরিচয় পত্র বা জন্ম সনদ ভেরিফিকেশনের পরে আপনার মৌলিক তথ্য যেমনআপনার নাম,  স্বামী/ পিতা নাম,  বর্তমান ঠিকানা, গ্রামের নাম, পোস্ট অফিস কোড জেলা উপজেলা ইত্যাদি সকল তথ্য দিয়ে সাবমিট করুন।
  • আপনার সকল তথ্য প্রদানের পরে আপনার নমিনের সকল তথ্য সঠিকভাবে প্রদান করুন যেমন নোমিন এর নাম নোমানের ছবি জন্ম সনদের ছবি এবং নাম্বার দিয়ে তথ্য যাচাই অপশনে ক্লিক করুন।
  • সোনালী ই-সেবা অ্যাপে প্রবেশ করে সকল তথ্য সঠিকভাবে প্রদানের পরে আপনার ফোনে একটি এসএমএস আসবে সে এসএমএসটি সংরক্ষণ করুন এবং আগামী তিন মাসের মধ্যে যে সোনালী ব্যাংকের শাখাতে যেয়ে স্বাক্ষর করে আসন ।
  • উপরে উল্লেখিত সকল তথ্য ইংরেজিতে প্রদান করুন।

সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে

সোনালী ব্যাংকের তিনটি ক্যাটাগরির অ্যাকাউন্ট খোলা যায়। প্রথম ক্যাটাগরি হলো সেভিংস একাউন্ট। সেভিংস অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য আপনাকে ৫০০ টাকা ডিপোজিট করতে হবে এবং একাউন্ট খোলার জন্য ব্যাংক  কর্তৃপক্ষ উল্লেখিত ফি প্রদান করতে হবে। কারেন্ট একাউন্ট অর্থাৎ চলমান অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য আপনাকে অ্যাকাউন্ট ফি প্রদান করতে হবে এবং ৫০০ টাকা ডিপোজিট করে একাউন্টে মূল ব্যালেন্স এর সাথে যুক্ত করতে হবে।

তৃতীয় ক্যাটেগরির একাউন্ট হলো অনলাইন একাউন্ট। অনলাইন একাউন্ট হল এমন একটি অ্যাকাউন্ট যেখানে আপনি ফোনের মাধ্যমে লেনদেন করতে পারবেন এবং যেকোনো সময় এটিএম থেকে টাকা উঠাতে পারবেন যদি আপনার কাছে কার্ড থাকে। অনলাইন একাউন্টের জন্য সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে হলে আপনাকে এক হাজার টাকা এড করতে হবে।

সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে

যেকোনো ব্যাংকে একাউন্ট খোলার জন্য ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আপনার  সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানার জন্য কিছু কাগজপত্র নিয়ে থাকে। সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বর্তমান সময়ে অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য কঠোর নিয়ম জারি করেছে। চলুন জেনে নিই যে সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে হলে কি কি কাগজপত্র বা ডকুমেন্ট প্রয়োজন।

  • আপনার পাসপোর্ট সাইজের সদ্য তোলা দুই কপি ছবি।
  • জাতীয় পরিচয় পত্র বা জন্ম সনদের ফটকপি।
  • আপনি যদি ব্যবসায়িক কাজে ঋণ নেয়ার জন্য অ্যাকাউন্ট খুলে থাকেন তাহলে আপনার বাণিজ্যিক ট্রেড লাইসেন্স এবং টিন নাম্বারের ফটোকপি।
  • নমিনির এক কপি সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি এবং জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি।
  • আবেদনকারী এবং নমিনিকে অবশ্যই বাংলাদেশী নাগরিক হতে হবে।

সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খোলার ফরম pdf

বাড়িতে বসে অনলাইনে  সোনালী ই-সেবা অ্যাপের মাধ্যমে সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খোলার জন্য অনলাইনে পিডিএফ ফরম ডাউনলোড করেও সে আবেদন করা যায়। আপনি যদি বাড়িতে বসে অনলাইনে  ফরম পূরণ করতে চান তাহলে এই লিংকে ক্লিক করুন।

সোনালী ব্যাংক একাউন্ট ট্রান্সফার করার নিয়ম

সরকারি চাকরিজীবীরা চাকরির বদলির সূত্রে অনেক সময় নানান জায়গায় ট্রান্সফার নিতে হয়। এমন সময় ঝামেলায় পড়ে যদি ব্যাংকে কোন একাউন্ট থেকে থাকে সেক্ষেত্রে।  তবে এক্ষেত্রেও একটি সুবিধা রয়েছে যদি আপনি আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফার করতে চান তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনাকে তিন মাস আগেই সোনালী ব্যাংকের শাখা যে কর্মকর্তাদের সাথে এই বিষয়ে আলোচনা করতে হবে।

অনেকের মাঝে একটি ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে যে সোনালী ব্যাংকের একাউন্ট ট্রান্সফার করা যায় না। এটি মূলত একটি ভুল ধারণা কারণ আপনি দেশের যে প্রান্তে অবস্থান করেন না কেন আপনার অ্যাকাউন্ট বাংলাদেশের এক জেলা থেকে অন্য জেলায় খুব সহজে ট্রান্সফার করা সম্ভব যদি সেই জেলাতে আপনার একাউন্ট কি তো ব্যাংকের শাখা থেকে থাকে।

সোনালী ব্যাংক এর একাউন্ট ট্রান্সফার করার জন্য আপনাকে সোনালী ব্যাংকের শাখায় যেয়ে একটি ফরম পূরণ করে আসতে হবে এবং আপনি যে চাকরির বদলি বা ব্যবসার সূত্রের স্থান পরিবর্তন করেছেন তার একটি বদলি সার্টিফিকেট দেখাতে হবে এবং ট্রান্সফার করার জন্য সার্ভিস ফি প্রদান করা লাগবে। সঠিক নিয়ম মেনে যদি আপনি ট্রান্সফারের আবেদন করে আসেন তাহলে তিন মাসের মধ্যে আপনার একাউন্টটি ট্রান্সফার করা সম্ভব।

সোনালী ব্যাংক একাউন্ট চেক করার নিয়ম

দুইটি উপায়ে সোনালী ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট চেক করা যায়। প্রথম উপায় হল আপনি যদি আপনার সাক্ষাতে যে ব্যাংক একাউন্ট খুলে থাকেন তাহলে ব্যাংকে যে কর্মকর্তাদের মাধ্যমে  ব্যাংক একাউন্ট চেক করতে পারবেন। দ্বিতীয় উপায় হল ফোনের মেসেজ অপশনে গিয়ে মেসেজিং এর মাধ্যমে আপনি আপনার একাউন্ট চেক করতে পারবেন। এছাড়াও আপনি যদি অনলাইনে সোনালী ই-সেবা অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইন একাউন্ট খুলে থাকেন তাহলে অ্যাপের মাধ্যমেও খুব সহজে  পাসওয়ার্ড দিয়ে একাউন্ট চেক করতে পারবেন।

এসএমএস এর মাধ্যমে একাউন্ট চেক করার জন্য আপনার ফোনের মেসেজ অপশনে গিয়ে টাইপ করুন SBL<SPACE>BAL এবং পাঠিয়ে দেন 26969 নাম্বারে। মেসেজটি সেন্ড করার কিছুক্ষণের মধ্যেই আপনাকে পুনরায় এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে যে আপনার একাউন্টে কত টাকা রয়েছে।

সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খোলার সুবিধা 

এক সময় ব্যাংকে একাউন্ট খোলার জন্য দীর্ঘ সময় লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকা লাগতো। কিন্তু বর্তমান সময় আধুনিক প্রযুক্তির যুগে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে না থেকে বাড়িতে বসেও একাউন্ট খোলা সম্ভব। এছাড়াও সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খোলার অনেকগুলো সুযোগ সুবিধা রয়েছে তার মধ্যে প্রধান সুবিধা হল বাংলাদেশের আর্থিক লেনদেন এবং সাধারণ মানুষের আস্থার জায়গা হল সোনালী ব্যাংক। এছাড়াও কিছু সুবিধা রয়েছে চলুন সেগুলো আপনাদেরকে জানিয়ে দিই,

সোনালী ব্যাংক সোনালী ই সেবা অ্যাপের মাধ্যমে সকল রকমের সুযোগ-সুবিধা লাভ করা সম্ভব অর্থাৎ মোবাইল ব্যাংকিং করা যায় সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খোলার মাধ্যমে। এছাড়াও সারাদেশে শাখা রয়েছে সোনালী ব্যাংকের তাই কোন রকমের ঝামেলা হয় না এবং সঞ্চয় ক্ষেত্রেও এ ব্যাংকে শতভাগ নিরাপদ।আপনি চাইলে এটিএম সেবাও সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে নিতে পারেন তাই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার সকল সুযোগ-সুবিধা প্রদানের জন্য সেরা সোনালী ব্যাংক।

লেখক এর শেষ কথা - ২০২৪ সালে সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম

প্রিয় পাঠক বন্ধুগণ আশা করি আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনার উপকৃত হবেন। যদি আপনারা আজকের আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হন তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন এবং কোন রকমের মন্তব্য থাকলে জানাবেন। এছাড়াও ব্যাংক সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য জানতে আমাদের ওয়েবসাইটের  ব্যাংকিং সেবা ক্যাটাগরি ভিজিট করে আসবেন ধন্যবাদ।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

স্বাগতম বিডিরনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url